Are you sure you want to report this content?
Illustration by @_ximena.arias
সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে মৃত্যুঞ্জয় সারাদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ভাবছিলো। তখনই মাথায় একটা নরম স্পর্শ অনুভব করলো। স্পর্শ থেকেই সে বুঝে গেলো সেটা কার হাত। মহিলাকন্ঠে প্রশ্ন এলো, “আজ এতো মন খারাপ কেন? আজও কি...?” মৃত্যুঞ্জয় প্রশ্নকর্তার দিকে না তাকিয়েই জবাব দিলো, “হ্যাঁ, আজও নতুন প্রকাশক বের করে দিলো আমাকে।”
- কিন্তু তোমার এবারের গল্পটা তো বেশ ভালোই লেগেছিলো আমার।
- সে তো গুপি-বাঘার গানও ভূতের রাজার তো ভালো লেগেছিল। কিন্তু প্রকাশকেরা তো সাধারণ মানুষের পছন্দ অপছন্দ দেখবে, তাই না?
- আচ্ছা আচ্ছা, শান্ত হও। আজকে কি অজুহাত দিয়েছে?
- বলছে ভূতের গল্প লিখতে। (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে) এইরকম একি গতে বাঁধা প্রেমকাহিনী নাকি এখন বাজারে খাচ্ছেনা। ও তো পুরো গল্পটা পড়েও দেখলনা। প্রথম পাতা আর শেষ পাতা পরেই বইটা ফিরিয়ে দিলো। বললো এসব চলবেনা। যদি ভূতের গল্প কিছু থাকে, তাহলে নিয়ে যেতে।
- (মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে) তাহলে একটা ভূতের গল্প লিখেই ফেলোনা।
- ধুর! ভয়ের গল্প কিছু মাথায় আসেনা। আমি বর্তমান প্রজন্মকে ভালোবাসা শেখাতে চাই, ভয় দেখাতে চাইনা।
- ভূতের গল্প মানেই যে শুধু ভয়েরই হবে, এমন তো বাধ্যতা নেই। ভূতের গল্প দিয়েও তো মানুষকে ভালোবাসা শেখানো যায়।
- কিসব উল্টোপাল্টা বলছো, ভূতের গল্পে ভয় থাকবেনা, ভালোবাসা থাকবে!
- কেন? সব ভূতই কি শুধু ভয় দেখায় নাকি? ভালবাসতেও তো পারে নাকি?
- সবার ভাবনাচিন্তা যদি তোমার মতো হতো, তাহলে খুবই ভালো হতো। কিন্তু সবাই ভূত বলতে ভয়কেই বোঝে। যত বিখ্যাত ভূতের গল্প আছে, সবই ভয়ের।
- ওরকম গল্প পড়েই তো মানুষের মনে ভূত সম্বন্ধে এই অদ্ভুত ধারণা তৈরি হয়েছে। তুমি অন্যরকম গল্প লিখে দেখনা, যদি সেই ধারণার পরিবর্তন করতে পারো। আচ্ছা এসব বাদ দাও, তুমি একটু হাসো তো। এরকম বাংলার পাঁচের মতো মুখ করে বসে থাকলে আমার ভালো লাগেনা।
- ভালো লাগছেনা কিছু। হাসিও পাচ্ছেনা।
তখনই মৃত্যুঞ্জয় তার কপালে একটা আলতো চুম্বন অনুভব করলো।
- এবার ভালো লাগছে?
- (হালকা হেসে) তুমি মাঝে মাঝে এমন পাগলামি করোনা, যে কি বলবো।
- এইতো হাসি আর খুশি দুটোই তোমার মুখে ফিরে এসেছে। নাও ওঠো, এবার একটা ভালো দেখে ভূতের গল্প লিখে ফেলো দেখি। তোমার কাছে তো সেটার অনুপ্রেরণাও রয়েছে।
এবার মৃত্যুঞ্জয় উঠে বসলো। বললো, “তুমি কি তোমাকে নিয়ে গল্প লেখার কথা বলছো?”
- শুধু আমাকে নিয়ে না, আমাদেরকে নিয়ে।
- (একগাল হেসে) এরকম ভূতের গল্প কে পড়বে, যে ভূত ভয় দেখানো তো দূরের কথা, বরং নিজেই ভূতে ভয় পায়!
- ভূতে ভয় পেলেও মানুষকে তো ভালোবাসি। আর তাছাড়া তুমি যেন খুব সাহসী তাই না? প্রথম যেদিন আমাকে দেখেছিলে, সেদিন তো অজ্ঞান হয়ে গেছিলে। তোমার অবস্থা দেখে তো আমিও ভয় পেয়ে গেছিলাম।
- এখন ভাবছি সেদিন শুধু অজ্ঞান না হয়ে মরে গেলেই বেশী ভালো হতো। ভূত হয়ে তোমার সাথেই থেকে যেতাম।
- ন্যাকাষষ্ঠী। মানুষ হয়েই নিজের বউকে সামলাতে পারছোনা, আবার ভূত হয়ে বিয়ে করার সখ।
এমন সময়ে কলিং বেল বাজলো।
- ওই যে, তোমার বউ অফিস থেকে চলে এসেছে, দরজা খুলে দাও। আমি আজ চললাম।
তারপর মৃত্যুঞ্জয়ের হাতের ওপর থেকে রূপকথার হাতটা আসতে আসতে অদৃশ্য হয়ে গেলো।
132 Launches
Part of the Love collection
Published on June 29, 2018
(6)
Characters left :
Category
You can edit published STORIES
Are you sure you want to delete this opinion?
Are you sure you want to delete this reply?
Are you sure you want to report this content?
This content has been reported as inappropriate. Our team will look into it ASAP. Thank You!
By signing up you agree to Launchora's Terms & Policies.
By signing up you agree to Launchora's Terms & Policies.